বনবিবি সুন্দরবনের প্রধান দেবী


সুন্দরবনের হিংস্র প্রাণী,মানুষখেকো রয়েল বেঙ্গল টাইগারকে বশে তার থেকে বাঁচার জন্য অসহায় মানুষ বনবিবি দেবীর পুজো করে।যেহুতু বাঘ হল মায়ের বাহন।
বনবিবির পুজো হিন্দু মুসলিম যে কেউ করতে পারে।শুদ্ধাচারে উপবাসে থেকে পুজা করতে হয়।পুজা শেষ করে প্রসাদ খেয়ে তার পর কিছু খাওয়া যায়।পরিবারের মধ্যে কোণ অশুচ হলে তারা পুজা করতে পারব না।
মা বনবিবি হল জঙ্গলের অধিস্বরী।হিন্দু,মুসলিম,খ্রিস্টান অ আধিবাসী নির্বিশেষে করতে পারে।জঙ্গলের সাথে যাদের প্রত্যক্ষ যোগাযোগ তারা বনবিবিকে স্বরণ করে।বলা যেতে পারে জঙ্গলবাসী মানুষরাই তার সেবক।
পুজা করা হয় পুথি পরে।বনবিবি পুজার একটি নির্দিষ্ট পুঁথি আছে।হিন্দু মেয়েরা যেভাবে পুজা পাঁচালী পরে করে তাদের বনবিবির পাঁচালী পরে পুজা করতে হয়।যে কেউ পাঁচালী পরতে পারে।তবে মুসলিম সম্প্রদায়ের ছোঁয়াচ আছে বলে অনেক স্থানে কোণ মুসলিমকে ডেকে এনে পুঁথি পরানো হয়।
সমাজে নিম্নশ্রেণীর লোকের মধ্যে এই পুজার ঋত্বিক হাওয়ার চল আছে।অনেক স্থানে পুরহিত ডেকে এনে হিন্দুমতে বনবিবির পুজা করা হয়।তবে মা বনবিবি সম্পূর্ণ লৌকিক বলে তার পুজার নির্দিষ্ট কোণ মন্ত্র নেই।
সুন্দরবনের লোকেরা বিভিন্ন সম্প্রদায়ভুক্ত এবং বিভিন্ন স্থান থেকে আগত।টাই এখানকার সংস্কৃতি হল বৈচিত্র্যময় এবং প্রকৃতিতে মিশ্র।বনবিবি পুজায় পুরোহিত নিয়োগের ক্ষেত্রে এই বৈচিত্র্য লক্ষ্য করার মত।
ব্যক্তিগত বা বারোয়ারী দুভাবেই এই পুজা করা হয়।বনবিবির ভোগ  যে কেউ দিতে পারে।এর নির্দিষ্ট কোণ বিধান নেই।
বারোয়ারী ভাবে চাল,ডাল ও পয়সা যোগার করে বনবিবি দেবীর পুজা করা হয়।
পুজার উদ্যোক্তারা প্রধানত পুরুষ সম্প্রদায়।যদি কোণ পুরুষ ব্যক্তিগত ভাবে বনবিবির পুজা করে থাকেন,তথাপি বলা চলে এই দেবী সমষ্টি দ্বারা অধিকতর পুজিতা।লৌকিক দেবীর জা বৈশিষ্ট্য এক্ষেত্রেও তাই ঘটেছে।সুন্দরবনের জঙ্গল হাসিল করা চাষাবাদ করা কাঠ কাটা ও মধু সংগ্রহ করা বা মৌমাছি ধরা।সব একই পরিসরে পরিবর্তে সমস্তিগত ব্যপার তাই প্রয়োজনের খাতিরে এই দেবী সমস্তিগত পুজাই পেয়ে এসেছেন।
বনবিবি আসলে সুন্দরবনের মানুষদের কাছে ভগবান।হিন্দু মুসলিম উভয়ে সম্প্রদায়  এর পুজা করেন।তাদের বিশ্বাস বনবিবির পুজা করলে তাদের সমস্ত বিপদ দূর হবে।


Comments