বনবিবির পুজোর উপকরন
আবির লাল ও সাদা,ফল,ফুল,মিষ্টি,পঞ্চশস্য,ধুপ
ধুনা,বরনসজ্জ,ধুতি,লাটিম,আয়না,চিরুনি,লাল কড়ি ঘুনসি।মধু,চাল,দুধ,মিষ্টি,ইত্যাদি
দিয়ে তৈরি ক্ষীর,বট,ডাব,গামছা চারটে,তীরকাঠি ইত্যাদি।
একটি পুঁথি আছে বনবিবি জহুরনামা বলে।সেটাই ব্রত কথার
মত পাঠ করা হয়।পাঠ সমাপন হলে তবেই পুজো শেষ হয়।আবার কোনও কোনও স্থানে যাত্রা পালাও
অনুষ্ঠিত হয়।এই সব যাত্রা পালার বিষয় বনবিবি ও দুঃখের বৃত্তান্ত।
সাধারণত যেকোনো সময়ে বনবিবির পুজো হতে পারে।জীবিকার
সন্ধানে কাঠ কাটতে বা মধু সংগ্রহ করতে যারা যায় তারা এই দেবীর পুজো করে থাকে।তাই
জেলে কাঠুরে এদের মধ্যে বনবিবির প্রচলনটা বেশি।
বছরে দুবার এই বনবিবির পুজো করা হয়।এই দুটি উপলক্ষ
হল যথাক্রমে পৌষসংক্রান্তি ও মাঘীপূর্ণিমা।তাছাড়া কোনও হিন্দু ঘরে যেমন প্রতি
বৃহস্পতিবার লক্ষ্মী পুজো হয়।তেমনি ঐ সম্প্রদায়ে প্রতি শুক্রবার ঘরোয়া ভাবে
বনবিবির পুজো হয়।এর কারণ হল শুক্রবার জঙ্গলে প্রবেশ নিষেধ।বিশ্বাস বনবিবি ওইদিন
জঙ্গলে থাকেন না।তিনি মক্কা-মদিনায় চলে যান।সেখানেও মুসলিম সমাজে বনবিবির পুজা করা
হয়।
তাই বনবিবির পুজার দিনক্ষণটি অত্যন্ত হিসাব
সাপেক্ষ।জঙ্গলে যাবার আগে জঙ্গলে গিয়ে এবং জঙ্গল থেকে ফিরে আসার সময় এই বনবিবির
পুজা করা হয়।জঙ্গলে যাওয়ার সুনির্দিষ্ট সময় নেই।জেলে,কাঠুরিয়া সম্প্রদায়রা সবসময় এ
যায়।মধু সংগ্রহকারীরা জাত ফাল্গুন ও চৈত্র মাসে।তাই অনেক জায়গায় বনবিবির বাৎসরিক
পুজা হতে দেখা যায়।আবার অগ্রাহন মাসেও বনবিবির পুজা হয়ে থাকে।
বনবিবির মূর্তির বিবরণ হল,বনবিবি বাঘকে বাহন করে
নিয়ে তার সুপুত্র আসিনা।মায়ের দিকে তার ভাই সাজলঙ্গি থাপড়া গদা হাতে দাঁড়িয়ে।মায়ের
কোলে পরম ভক্ত দুঃখে।মায়ের মুখের দিকে চেয়ে হাত জ্বর করে পার্থনারত।
আবার অনেক মূর্তির মধ্যে বরকান গাজীকে মায়ের অনুগত
হিসেবে দেখা যায়।দুখে কে দেখা যায় যারা মায়ের সামনে হাত জোড় করে দণ্ডায়মান বা
হাঁটু গেরে হাত জোড় করে উপবিষ্ট অবস্থায়।দুখে হল মায়ের বরপুত্র।সাজজংলী হল বনবিবির
আপন মায়ের পেটের ভাই।
এরা যমজ ভাইবোন দেবী এবং যারা দেবীর সঙ্গে ঠাই
পেয়েছে।প্রত্যেক এর দুটি করে হাত।সাধারণত বনবিবির চেহারায় অস্বাভাবিক কোনও
অঙ্গপ্রতঙ্গের দৃষ্টি গোচর হয় না।
সাধারণ দেবীর মতই তার আকার।
Comments
Post a Comment