ধনা মোনা ও বনবিবি
ধনা মোনা সপ্তডিঙ্গা সাজিয়ে লোক ছুটিয়ে বাণিজ্য করতে গেলেন।কিন্তু একজন লোক কম
পরল।সেই গ্রামে দুখে বলে একটি ছেলে থাকত বয়স ১০-১২ বছর হবে ছেলেটির বাবা নেই ধনা মোনা
এর সঙ্গে দুখে সম্পর্কে চাচা ও ভাইপো।এই দুখেকে ধনা তার সঙ্গে নিয়ে যাবে বলে মনস্থ
করল।তাই সে দুখের বাড়ি গেল এবং তাকে যাওয়ার প্রস্তাব দিল।দুখে তো শুনে লাফিয়ে উঠল আনন্দে
যাওয়ার জন্য,কিন্তু দুখের মা তাকে ছাড়তে রাজি নন তিনি বললেন বাদাতে অনেক বিপদ,তাছাড়া
সেখানে রয়েছে বাঘের ভয় দুখে তার একমাত্র ছেলে অতএব তিনি দুখেকে ধনার সঙ্গে যেতে দিতে
রাজি নন।
শেষে প্রচুর টাকা পয়সার লোভ দেখিয়ে তার মাকে রাজি করালেন।দুখেকে নিয়ে চলল বাদাতে
তখন দুখের মা চোখের জল মুছতে মুছতে তাকে বললেন বাদাতে বনবিবি দেবী আছেন যখন কোনও বিপদে
পরবে তখন যেন তাকে স্বরন করে তাহলে তার কোনও বিপদ হবে না।দুখের মা বনবিবির পুজা করলেন।
ধনার সপ্তডিঙ্গা রায়মঙ্গল পার হয়ে হেরেভাঙ্গা ফলতলি ইত্যাদি অতিক্রম করে গভীর জঙ্গলে
প্রবেশ করলেন।এদিকে দক্ষিণ রায়ের চক্রান্তে বাদার সমস্ত মধু ও মোম উধাও হয়ে গেল।ধনার
উপর দক্ষিণ রায় প্রচণ্ড চটে গেলেন কারন ধনা দক্ষিণ রায়ের কোনও পুজা না দিয়েই মহলে প্রবেশ
করলেন।গড় থালিতে গিয়ে ধনা তার সপ্তডিঙ্গা বাঁধল।দক্ষিণ রায় গরখালি অঞ্চলে অলৌকিক ভাবে
মধুচাক সৃষ্টি করল।এবং ধনা মোনা মহানন্দে সেই চাক ভাঙ্গতে লাগল।কিন্তু কোনও মধু সংগ্রহ করা গেল
না।দক্ষিণ রায়ের মায়াবি ক্ষমতায় সব মধু পরে যেতে লাগল ধনা তখন বুঝল যে নিশ্চয়ই
দেবতা অসন্তুষ্ট হয়েছে সেদিন রাতে ধনাকে দক্ষিণ রায় স্বপ্নে দেখা দিলেন এবং তার
পরিচয়ই দিলেন বললেন তার পিতা দণ্ডবক্ষ মুনি।এই বনের সবকিছু তার অধিকার ভুক্ত তার
পুজা দিয়ে তারপর সব কিছু সংগ্রহ করতে হবে।
তারপর দক্ষিণ রায়ের পুজা করে মধু ও মোম সংগ্রহ করলেন।তারপর দুখেকে রান্না করার
জন্য কাঠ আনতে বাদাতে পাঠালেন এদিকে ধনা মোনা দুখেকে ফেলে বাড়ির দিকে যাত্রা করলেন।কাঠ
কেটে এসে দেখলেন ধনা মোনা কেউ নেই।সপ্তডিঙ্গা পর্যন্ত উধাও।এদিকে দুখে ধরতে দক্ষিণ
রায় বাঘ সেজে ধরতে এলেন।বাঘ দেখে দুখে বনবিবি মা বাঁচাও বলে স্বরন করতে লাগলেন।বনবিবি
তার ভাই সাজজঙ্গলিকে পাঠালেন দুখে কে বাঁচাতে অতঃপর বনবিবি দুখেকে কোলে তুলে নিলেন
এবং দক্ষিণ রায়কে ধরতে সাজজঙ্গলি তার পিছনে ছুটলেন।
Comments
Post a Comment