দক্ষিন রায় ও বনবিবি


দক্ষিণবঙ্গের সুন্দরবন অঞ্চলে দক্ষিণ রায় নামটির সঙ্গে অনেকেই পরিচিত।এই দক্ষিন রায় হলেন বাঘের দেবতা,একে তুষ্ট করার জন্য প্রাচীন লোক কবি রায় মঙ্গল কাব্য রচনা করে।এই দক্ষিণ রায় নাকি ব্যঘ্রের রুপ নিয়ে এসে মানুষ ধরে নিয়ে যান বলে বিশ্বাস।অপরপক্ষে বনবিবি ও তার ভাই সাজজংলী দক্ষিণ রায়ের মানুষ নিধনের হাত থেকে লোক সমাজকে রক্ষা করে।
জঙ্গল করা লোকেরা দল বেধে জীবিকার সন্ধানে জঙ্গলে প্রবেশ করে সারা দিন রাত্রি জাপন করে এবং মায়ের গান করে।বনের মধ্যে আছে ডাকাতের ভয় বাঘের ভয়।এবং অন্যান্য নানাবিধ অজানা ভয় তো আছেই।তাই সুন্দরবনের মানুষদের প্রয়োজনের মধ্যেই তার পুজা করার তাগিদ লুকিয়ে আছে।এই প্রয়োজনের তাগিদেই কথিত আছে বনবিবি ও দক্ষিণ রায়।
বনবিবি ও দক্ষিন রায় প্রচলিত কাহিনী প্রসঙ্গে আসা যাক;
এক ফকির ছিলেন তার নাম বেরাহিম।ফকিরের স্ত্রীর নাম ফুলবিবি,এই ফুলবিবি ছিলেন নিঃসন্তান।বেরাহিম তাই আর একটি বিয়ে করবেন বলে ঠিক করলেন।কিন্তু বেরাহিমের এই সিধান্তের কথা শুনে ফুলবিবি কান্না জুরে দিলেন।শেষে তাকে সান্তনা দিতে গিয়ে বেরাহিম বললেন যে তিনি বিয়ে  করতে যাচ্ছেন ঠিক কিন্তু ফুলবিবি তার স্ত্রী হিসেবে লাভ করবে শ্রেষ্ঠ সম্মান।তিনি আর বললেন যে তিনি সবসময় ফুলবিবির কথা মতন চলবে।তার কোণ বাসনা তিনি অপূর্ণ রাখবেন না।তখন ফুলবিবি এই বিয়েতে মত দিলেন।

এদিকে বেরাহিম যে কন্যা কে বিয়ে করে ঘরে নিয়ে এলেন তার নাম হল গুলাম বিবি।বৎসরান্তে গুলাম বিবি সন্তান সম্ভবা হয়ে পড়লেন।সুযোগ বুঝে বনবিবি বলে ফেললেন তার স্বামী কে যে এবার গুলাম বিবিকে বনবাসে  পাঠাতে হবে।বেরাহিম তার প্রথম স্ত্রী কে অনেক বোঝালেন যে কিন্তু সে বোঝাবার নয়।কিন্তু ফুলবিবির সেই একই আবদার।শেষ আর কি করেন বেরাহিম তিনি যে ফুলবিবির কাছে কথা দিয়েছেন,অবশেষ নিজের দুঃখ নিজেই গোপন করে বেরাহিম তার দ্বিতীয় স্ত্রী গুলাম বিবিকে বনবাসে দিলেন।বাদাতে থাকাকালীন গুলাম বিবির গর্ভে জন্ম হয় দুই সন্তানের এদের একজন হলেন সাজঙ্গলি এবং একজন হলেন বনবিবি যার থেকে সুন্দনবনের প্রধান দেবী বনবিবির সৃষ্টি।

Comments